Bogurar doi| Raisa style|

 বগুড়ার দই



বগুড়া জেলা, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ জেলা, অতুলনীয় স্বাদের ও গুণের জন্য পরিচিত। ২০২৩ সালে, বগুড়ার সরার দই ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। দই হল এক ধরনের দুগ্ধজাত খাদ্য, যা দুধের ব্যাক্টেরিয়া গাঁজন হতে প্রস্তুত করা হয়। যখন সারা বাংলাদেশে দই প্রচুরভাবে পাওয়া যায়, তখনও বগুড়ার দই দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। এটির খ্যাতি মূলত ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়েছে এবং ষাটের দশকের প্রথম ভাগে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ থেকে প্রসারিত হয়েছে। বগুড়ার দই একসময় পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে আত্মীয় বলে গৌরবিত করেছিল, যখন ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তাদের সহানুভূতির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিল।

বগুড়ার দই এর ইতিহাস

বগুড়ার দইয়ের ইতিহাস শুরু হয় বগুড়ার শেরপুর উপজেলা থেকে। স্থানীয়দের অনুযায়ী, সনাতন ঘোষ পরিবার দই তৈরি করে বগুড়াকে দেশের সর্বত্র পরিচিত করে তুলেছিল। পরবর্তীতে ঘোষদের নেতৃত্বে এটি ধীরে ধীরে মুসলিম সম্প্রদায় সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের অধীনে চলে গেছে।



জানা যায় বগুড়ার শেরপুরে প্রথম দই তৈরি হয়েছিল প্রায় আড়াইশ বছর আগে। তৎকালীন বগুড়ার শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি করেন। টক দই তৈরি থেকে বংশ পরম্পরায় তা চিনিপাতা বা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়। এবং কালের বিবর্তনে স্বাদের বৈচিত্র্যের কারণে দইয়ের বহুমুখী ব্যবহার শুরু হয়। টক দই দিয়ে মেজবানের রান্না ও ঘোল তৈরি হয়। অতিথি আপ্যায়নে চলে মিষ্টি দই।



প্রস্তুত প্রণালি

বগুড়ার দইয়ের ঐতিহাসিক পাত্র প্রায় আড়াইশ বছরের ধরে যায়, তবে সেই সময়টি স্বাধীনতার আগের কালে হয়েছিল একটি স্বর্ণযুগ। সেই দিনের দই তৈরি পদ্ধতি খুবই গোপনীয় ছিল। এ সময়ে ধানের গোষ্ঠীগুলি দই তৈরি করার সময় বিশেষ মেয়াদ রক্ষা করত। তাই, বাইরের কেউ দই তৈরি করতে পারত না এবং এটির রেসিপি ধরে রাখতে পারত না। পরবর্তীতে, এই রেসিপির গোপনীয়তা থাকতেই থাকতে এটি একটি খোলামেলা ব্যবসা হিসেবে বাড়ছে এবং এখন শেরপুরে অনেক ব্যবসায়ী এই দই তৈরি করে থাকছে। তাদের মধ্যে, ঘোষ পরিবারের লোকজন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।


দই তৈরিতে প্রয়োজন হয় গরুর দুধ, চিনি, সামান্য পরিমাণে পুরোনো দই এবং মাটির একটি হাঁড়ি বা সরা। এটি সহজভাবে কড়াই বা পাতিলে দুধ জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয়।

গুড়ার দই কেন বিখ্যাত

২০২৩ সালে বগুড়ার সরার দই ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।




1 comment:

Powered by Blogger.